ব্লগ 12: প্রাচীনভারতে অ্যারোমাথেরাপি

Blog 12: প্রাচীনভারতে অ্যারোমাথেরাপি - Keya Seth Aromatherapy

প্রাচীন ভারতে অ্যারোমাথেরাপি

সর্বোচ্চ পূর্বতম সভ্যতা ব্যবস্থা হল হল সভ্যতা এবং আর্য়ুবেদ শাস্ত্র হল সম্ভবত চিকিৎসাজগত নথিভূক্তের প্রাচীন চিকিৎসাশাস্ত্র। প্রায় চারদশ খ্রীষ্টপূর্বব্দে রচিত ঋগদে উল্লেখ আছে যে, পূর্ব ভারতে অ্যারোমাথেরাপি এবং আর্য়ুবেশাস্ত্রীচন্ন ছিল।

আবার চরক সংহিতা ও সুশ্রুত সংহিতা অনুযায়ী তৎৎকালীন অর্গানাইজড চিকিৎসার সিংহভাগই ছিল অ্যারোম্যাটিক প্লান্টের বিভিন্ন ভাগ থেকে প্রাপ্ত উপকারিতা। যেগুলি রোগ নিরাময়ের জন্য হবে এবং যা আজও আর্য়ুবেদ চিকিৎসায় গ্রহণ করবে।

রামায়ণে অ্যারোমাথেরাপি

রামায়ণে অ্যারোমাথেরাপি

প্রাচীন শাস্ত্রের বিভিন্ন জায়গায় অ্যারোমাথেরাপি প্রয়োগের কথা জানা যায়। এ বিষয়ে উল্লেখ করতে হয় রামায় কথা। রামায়ণেই প্রথম অ্যারোমাথেরাপির ব্যবহার সম্বন্ধে জানা যায়। রামায় 'যুদ্ধকান্ডে', ক্ষমতালোভী হন রাবণ ইন্দ্রজাতের 'শক্তির নির্দেশে'। ইন্দ্রজিৎ ছিলেন বহুদিব্যাস্ত্রে পারদর্শী একজন প্রবল পরাক্রমী যোদ্ধা।

রামায়ণে অ্যারোমাথেরাপি

তিনি যুদ্ধে রাব জয় সুনিশ্চিত করতে পারলেন এই অস্ত্র দিয়ে। আমার সেই খবরে সংজ্ঞাহীন হওয়া এবং প্রায় মৃত্যুমুখে পড়ে যান। অনেক সময় নিয়ে যাওয়ার পরে তার জ্ঞান না ফেরায় হনুমান লঙ্কার প্রধান রাজ-চিকিৎসক সুসেন উপদেশ নেওয়ার জন্য উপস্থিত হন।

সেই অনুযায়ী, সুসেনা হনুমান তক্ষুনি দ্রোণকারি পাহাড় থেকে নির্দিষ্ট কিছু ঔষধগুণ হার্ব 'বুটি' নিয়ে আসতে এবং কিছু হার্বসের জায়গায় বসতে পরামর্শ দেন এবং কিছু গ্রহণ করেন মহারাজ নাকরে অথবা ধরেন, যাতে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের সময় ঘ্রাণার মাধ্যমে এরগন্ধের শারীরিক গঠন। খোঁজ করে।

প্রাচীন ভারতে অ্যারোমাথেরাপি

যে চারটি হার্বস সুসেনা তাঁকে আনতে বলেছিলেন, সেগুলি হল মৃতসঞ্জীবনী, বিশল্যাকরী, সন্ধিকরণী ও সর্বর্ণাকরণী (বাল্মিকী রামায়ণ ৭৪তম অধ্যায়, যুদ্ধকান্ড, শ্লোক ২৯-৩৪)। রূমান দ্রুত সেখানে যান এবং অজানা উদ্ভিদের মধ্যে তার যোগসূত্র খুঁজে পান না, তিনি সম্পূর্ণ পাহাড়ে নিজের কাঁধে নিয়ে যান। সুসেনা শেষকে গভীর থেকে তুলে ধরেন হার্বসগুলো নিয়ে তাদের ওপর নির্ভর করার চেষ্টা করেন এবং তাঁর মৃত্যু মুখ থেকে তুলেন।

অরোমাথেরাপি এবং গৌতম বুদ্ধ

অরোমাথেরাপি এবং গৌতম বুদ্ধ

বৌদ্ধগ্রীহ 'ত্রিপিটক'-এ তথ্য উল্লেখ করা যায় যে, তৎকালীন সময়ে বুদ্ধেবেরে ধর্ম চিকিৎসায় বারবার ফুলের সুগন্ধ এবং গাছপালার নির্যাস ব্যবহার করা হয়েছিল এবং এই চিকিৎসা গৌতম বুদ্ধ আরোগ্যলাভ ঘটতে পারে। এই তথ্যের মাধ্যমে এটিই তৈরি হয় যে অ্যারোমাথেরাপি সুগন্ধার চিকিৎসার ব্যবহার সেই যুগেও রোগ নিরাময়ের নিজের সুগৃহিত ছিল এবং মান্যতা বড়াল। বুদ্ধের সমসাময়িক যুগে অ্যারোম্যাটিক প্ল্যান্ট এবং তার পূর্বার্থ প্রয়োগের প্রসঙ্গটি উথাপিত হলে সর্বোত্তম যে সুদক্ষের বর্ণাঢ্য নাম উল্লেখ করা হয়, তিনি জীবক।

অরোমাথেরাপি এবং গৌতম বুদ্ধ

রাজাগৃহার রাজ জীবক ছিলেন মহারাজা অভেয়র পুত্র এবং মহারাজা বিম্বিসের পৌত্র। তক্ষশীলায় খ্যাতনামা অধ্যাপক দীশাপামক আচার্য-র তত্ত্বাবধানে, সাত বৎসরকাল শেষ সময় ধরে, ওষুধের বিষয়ে অধ্যয়ন করেন জীবক। ওষুধি গুণগত হার্বস সম্পর্কে তাঁর জ্ঞান এবং চিকিৎসাশাস্ত্রে তাঁর পরামর্শই শুধুর শীর্ষস্থানীয় দেয়নি, সমসাময়িক সমাজের সম্মানিত ব্যাক্তিবর্গ তাঁকে প্রশংসিত করেছিলেন।

গৌতম বুদ্ধের চিকিৎসার জন্য, সে যুগের প্রখ্যাত উল্লেখ হিসাবে অনেকবারই পড়ে জীবকের। বুদ্ধদেব যখন আন্ত্রিক রূদ্ধতাজনিত রোগে ভুগ তখন বুদ্ধদেবের শারীরিক অবস্থা এতটা খারাপ ছিল যে জীবিত থাকতে পারে সেই বিষয়ে আলোচনা করতে পারেন যে তীব্র কোষ্ঠনাশক তাঁর সহ্য হবে না। এই সময় তিনি বুদ্ধদেবকে তিন মুঠো পদ্মফুলের সুগন্ধ ঘ্রাণ হিসেবে গ্রহণ করার পরামর্শ দেন এবং মাসাজ দেন।

অরোমাথেরাপি এবং গৌতম বুদ্ধ

আরও একবার একটি হন গৌতম একটি নক্ষত্রের নির্দেশে বুট। বুদ্ধবের এক তুতো ভাই, দেবদত্ত তাঁর শিলা নিক্ষেপকারী আমি থেকে আসা আসাকে খণ্ডের শব্দে বুদ্ধদেবের পাতার পাতার দিকে একটি জখম হয়। ক্ষয়স্থানের অবস্থা এতটা সঙ্গীন ছিল যে তৎক্ষনাৎ চিকিৎসা না করা টাইমকর্তার পাশের নেতা নেওয়ার কথা বলা সম্ভব ছিল। শেষ তাঁকে জীবকের বাড়িতে নিয়ে নেওয়া হয় চিকিৎসার জন্য।

জীবক তখন এমন কিছু গাছপালার নির্যাস দিয়ে ক্ষত পরিষ্কার করেন যার মধ্যে অ্যাস্ট্রিনজেন্ট গুণাগুণ রয়েছে (খুব সম্ভবত অ্যান্টি মাইক্রোবিয়ালযুক্ত আসানশিয়াল অয়েল ) এবং তিনি ক্ষত্রটি বেঁধে দেন। জীবিতক অবশ্য নিজেও গৌতম বুদ্ধের শিষ্যতা গ্রহণ করেন।

অরোমাথেরাপি এবং গৌতম বুদ্ধ

বুদ্ধদেব স্বয়ং স্বয়ং স্বয়ং স্বয়ং স্বয়ংস্বাস্থ্য চিকিৎসাও বিভিন্ন সুগন্ধের চিকিৎসার দ্বারা সাধারণ রোগ নিরাময় প্রদান এবং তাঁর এই সুনির্দিষ্ট পরামর্শ ছিল। তৎকালীন শিলালিপি থেকে পাওয়া যায় যে তিনি সন্তানদের শারীরিক জানার জন্য যন্ত্রণা এবং ব্যথায় ভাং-পাতা ফুটন্ত জলে তার ঘা নিদান দিতে পারেন। ফলে সুগন্ধি গাছপালা থেকে উদ্ভূত উপকরণ ব্যবহার এবং তৎসহ সুগন্ধি ফুলের দেশ ঘ্রাণ নেওয়ার রোগ নিরাময় এবং সেই সময় পরী জগৎ এবং উপস্থিতি।

 অরোমাথেরাপি এবং সম্রাট অশোক

অরোমাথেরাপি এবং সম্রাট অশোক

মহান ব্যক্তি অশোক উজ্জ্বীবিন যুদ্ধে সম্পাদিত ব্যক্তি এবং সম্ভবত সুগন্ধযুক্ত নৈকট্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে তার চিকিৎসা করা হয়। গাছপালার অংশবলি এবং সুগন্ধী স্নান তাঁর আরোগ্যলাভকে তরান্বিত করে। মৌর্য সম্রাট বিন্দুসারের পুত্র ছিলেন সম্রাট অশোক। যদিও অশোকের চাইতে বয়োজেষ্ঠ বেশ নেতা সহোদর ছিলেন, ভয়পি যুদ্ধয় বিদ্যা বিদ্যায় তিনি জ্ঞান এবং ক্ষমতা চন্দ্র এতটাই এগিয়ে যেতে পারেন তাঁর সহোদরদের মধ্যে যে তিনি মৌর্যবংশের শান্তি তাঁর পিতামহ গুপ্ত মৌর্যের অত্যন্ত পাত্র হয়েছিলেন।

অরোমাথেরাপি এবং সম্রাট অশোক

মৌর্য সেনাবাহিনি অশোকের বর্ধমান গণপ্রধান তাঁর ভ্রাঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এই আশে পাশের বিন্দুসার জেনো অশোক পরবর্তী সম্পাদিত পদে অভিষিক্ত আশা করবেন। বিন্দুসারের জ্যেষ্ঠপুত্র সুসীম- এর প্ররোচনায় তাই অশোক নির্বাসনে হয়। তবে অচিরেই আবার তাঁকে মন্তব্য আনা হয় উজ্জ্বয়িনীর হিংস্র অভ্যুত্থান দমন করার উদ্দেশ্যে, যেখানে সম্রাট অশোক নিদারুণ হন। যদিও তাঁর নেতার প্রধানরা সফলভাবে এই অজুত্থান নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এই পর্বের কালে অকে রাখা হয়েছিল গোপন এবং চিকিৎসাও করা হয়েছিল সংগোপনে যাতে তার বিড়াল জানতে পারেন। বৌদ্ধ সন্ন্য্যা এবং সন্ন্যাসীরা তাঁর চিকিৎসায় নিয়োজিত ছিলেন। চিকিৎসার অনুবর্তী সময়ে বৈধ জনৈক বৌদ্ধ অশোক সেবা-যন করেন, পরবর্তীতে অশোক দ্বিতীয় দেব বা তৃতীয় মহিলা হন স্ত্রী।

যে চিকিৎসায় এবং চিকিৎসায় অশোক আরোগ্যলাভ করেন সেগুলি সবই ছিল বৌদ্ধ চিকিৎসা পদ্ধতি। বৌদ্ধধর্মে ক্ষত নিরাময়ের জন্য সুগন্ধী গাছপালার অংশবিশেষ এবং সুগন্ধী ফুল ব্যবহার ছিল। এমনকী গৌতম বুদ্ধ স্বয়ং এই ওষুধ প্রয়োগের পরামর্শ দিতে। তাঁর শিষ্য জীবকও একই পদ্ধতিতে চিকিৎসা করতে।

সম্রাট অশোকের রাজকীয় স্নানপর্বে, তাঁর স্নানের জলে সুগন্ধী ফুল যোগ করার উল্লেখ পাওয়া যায় ইতিহাসের পাতায়। শরীর ও মনের জন্য স্নানকে আরামদায়ক এবং শক্তিবর্ধক করে তোলার জন্য তার স্নানের জলে সুগন্ধী ফুল মেশানো প্রচলন ছিল সেই যুগে।

 মুঘলযুগে অ্যারোমাথেরাপি

মুঘল যুগে অ্যারোমাথেরাপি

ভারতে সাম্রাজ্যের দেশ সম্রাট বাবর, ষোড়শ মোগলতে সুন্ধী এবং সুরভিত গাছপালা ব্যবহার পার্শিয়ান সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা এদেশে। সে যুগের রাজা এবং রানিরা বিভিন্ন সুরভিত ফুল যেমন গোলাপ, জুঁই, চাঁপা, নার্গিস প্রভৃতি সমৃদ্ধি জল স্নাধারে ভরে অবগাহন স্নান করতে চান। এই রাজকীয় স্নানে যেমন শরীর ও পরিপূর্ণ আরাম লাভ করতে মনে পড়ে মনে হয় এ কথিত আছে যে মোঘল যুগের রমণীদের রূপরহস্যের চাবিঠিই ছিল এই রাজীয় বিলাসি স্নান।

মুঘলযুগে অ্যারোমাথেরাপি

মোঘল সাম্রাজ্যের সুবিখ্যাত ঐতিহাসিক আবুল ফজল তাঁর নথিতে উল্লেখ করেছেন যে, ফুল থেকে সুগন্ধী প্রস্তুতের জন্য সম্রাট আকবরের অপিরসীম ইচ্ছা ছিল এবং এই সুগন্ধী প্রকৃতপক্ষে ধর্মের উদ্দেশ্য এবং প্রাসাদ অভ্যন্তের পরিবেশকে সুগন্ধিত করে তোলার জন্য।

জাহাঙ্গীরের স্ত্রী নুরজাহানের মা আসমত বেগমের, আকস্মিক রোজ এসেনশিয়াল অয়েলের আলোর চমকপ্রদ কাহিনি জানা যায় মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর আত্মজীবনী 'তুজুকি জাহাঙ্গিরি' থেকে।

আকবর-জাহাঙ্গীর উত্তর শব্দে রাজমুকুট অর্জন করেন। সম্রাট বর্ণনা থেকে জানা যায়, সেবার যখন আসমত বেগম গোলাপের পাপড়ি থেকে গোলাপ-জল তৈরি করছিলেন, সম্ভবত ত্বকের যত্ন নিতে এবং এর থেকে প্রাপ্ত মৃদু, নেটওয়ার্ক এবং স্থায়ী সুগন্ধী পাওয়ার জন্য, তখনই একটি আশ্চর্য বিষয় তিনি করেন। তিনি লক্ষ করেন যে পাত্রে গরম গোলাপ জল জমা হচ্ছে

প্রাচীন ভারতে অ্যারোমাথেরাপি

আসব বেগম কৌতুহলবশত এই কৌতুক তৈলাক্তের থেকে এক ফোটা আঙ্গুলে অংশ নিয়ে হাতলুতে ঘষেবনন এবং তিনি সম্পূর্ণ সম্পূর্ণ কক্ষটিই গভীর গোলাপের গন্ধে পরিপূর্ণ হেয়। এটিই ছিল রোজ এসেনশিয়াল অয়েলের আদি পর্বত। পরবর্তী আকবরের স্ত্রী সালিমা বেগমের বেগম এই সুগন্ধী তেলের নামকরণ করেন 'জাহানির-সুগন্ধী'।

মুঘল যুগের উপলব্ধ নথি অনুযায়ী, রোগ নিরাময়ের উপস্থিতি এসেছেনশিয়াল অয়েলের ব্যবহারটা নির্বাচন করতে না সে সময়। সুরভিত ফুলের নির্যাস থেকে অয়েল প্রাপ্ত অয়েল ব্যবহার করা সাহসিক প্রশান্তি লাভের জন্য এবং ধর্মীয় উদ্দেশ্যে। এইসব গুণসমৃদ্ধ অয়েলগুলি নিরাপত্তা এবং স্নানের ক্ষেত্রে ব্যবহার উল্লেখ করা যায়।

এই ব্লগটি পড়ুন ইংরেজিতেও

  |  

More Posts

0 comments

Leave a comment

All blog comments are checked prior to publishing